ছাইয়েদুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ প্রায় দুই দশক পর হতে যাওয়া চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনস্থলে প্রবেশ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এসময় এক পক্ষের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দফায় দফায় সম্মেলনস্থল নগরীর পাঁচলাইশের কিং অব চিটাগাং কমিউনিটি সেন্টারে এসব ঘটনা ঘটে।
মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেগম হাসিনা মহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক তপতি সেনগুপ্তার অনুসারীদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় সম্মেলনে প্রবেশ করতে না পারা তপতি সেনগুপ্তার অনুসারীরা সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়া প্রধান অতিথির গাড়িবহরেও বাধা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সম্মেলনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে নগর মহিলা লীগের সভাপতি বেগম হাসিনা মহিউদ্দিনের হাতে। এসময় অন্য পক্ষের হয়ে নেতৃত্ব দেওয়া তপতি সেনগুপ্তা তার অনুসারীদের নিয়ে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করতে চান। কিন্তু তাদের কাউন্সিলিং কার্ড না থাকায় পুলিশ বাধা দেন। সম্মেলনে প্রবেশ করতে না পেরে তারা এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
তপতি সেনগুপ্তার অভিযোগ, তার পক্ষের নেতাকর্মীদের কাউকেই সম্মেলনে প্রবেশ করার কাউন্সিলিং কার্ড দেওয়া হয়নি। তার পক্ষের মধ্যে শুধুমাত্র কমিটিতে যারা আছেন তারাই কেবল কার্ড পেয়েছেন। অন্য কয়েকশ নেতাকর্মীর কার্ড না থাকার অজুহাতে সম্মেলনেস্থলে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে তপতি সেনগুপ্তার কয়েক’শ অনুসারী কমিউনিটি সেন্টারের প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়েছেন এবং তারা বারবার সম্মেলনে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে।
এদিকে বেলা পৌনে ১২টার দিকে সম্মেলনের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা গাড়ি নিয়ে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করতে চাইলে তার গাড়ি বহরে বাধা দেন তপতি সেনগুপ্তার অনুসারীরা। এ সময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে আবারও পুলিশের সঙ্গে তাদের ব্যাপক ধাক্কাধাক্কি হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যাদের কাউন্সিলিং কার্ড আছে তাদের সম্মেলনে প্রবেশ করতে দিয়েছি। কিন্তু অনেকের কার্ড না থাকা সত্বেও সম্মেলনে প্রবেশ করতে চায়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে আমরা তাদের সরিয়ে দিই।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে সর্বশেষ নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারের স্ত্রী নীলুফার কায়সারকে সভাপতি এবং তপতী সেনগুপ্তাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
এরপর আর নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। প্রয়াত নীলুফার কায়সারের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন।
অগ্রদৃষ্টি.কম // এমএসআই